আপনিও কি ইমপ্রুভমেন্ট শব্দটির সাথে পরিচিত? ইমপ্রুভমেন্ট নিয়ে আপনিও কি দ্বিধায় ভুগছেন?
ইউনিভার্সিটিতে প্রবেশ করার পর সকল একটি শব্দ নিয়ে আমাদের সবার মধ্যেই একটি দ্বিধা ও ভয় কাজ করে। আর তা হচ্ছে “ইমপ্রুভমেন্ট”। ইমপ্রুভমেন্ট শব্দটির সাথে কম বেশি আমরা সকলেই পরিচিত। কিন্তু এই ইমপ্রুভমেন্ট সম্পর্কে আমরা অনেকেই সম্পূর্ণ জানি না। বিশেষ করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমপ্রুভমেন্টের নিয়ম সম্পর্কে আমরা অনেকেই অগ্যত। তাই আজকে আমরা জানবো, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমপ্রুভমেন্টের নিয়ম সম্পর্কে জানা অজানা কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
ইমপ্রুভমেন্ট হচ্ছে এক বা একাধিক বিষয়ে যদি রেজাল্ট ভালো না হয় বা তুলনামূলক রেজাল্ট না আসলে ওই বিষয় গুলো আবার পুনরায় নতুন করে পরীক্ষা দেওয়া। ইমপ্রুভমেন্ট পরিক্ষায় কোন পরীক্ষার্থী যদি পরিক্ষা দেয় তবে তাকে রেগুলার শিক্ষার্থী হিসেবে ধরা হবে। তার সার্টিফিকেটে দিয়ে চাকরির ক্ষেত্রে কোন প্রভাব পরবে না। তবে এক্ষেত্রে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেশ কিছু নিয়ম ধার্য করা হয়েছে। চলুন জেনে নেই সেগুলো-
- সকল কোর্সের ( ইনকোর্স /তত্ত্বীয় /ব্যবহারিক/ মাঠকর্ম/মৌখিক) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক।
- ১ম বর্ষ থেকে ২য় বর্ষে ইমপ্রুভমেন্টের জন্য কমপক্ষে ৩টি বিষয়ে পাশ করতে হবে এবং জিপিএ- ১.৭৫ অর্জন করতে হবে।
- ২য় বর্ষ থেকে ৩য় বর্ষে ইমপ্রুভমেন্টের জন্য কমপক্ষে ৩টি বিষয়ে পাশ করতে হবে এবং কমপক্ষে জিপিএ- ২.০০ অর্জন করতে হবে।
- ৩য় বর্ষ থেকে ৪র্থ বর্ষে ইমপ্রুভমেন্টের জন্য কমপক্ষে ৪টি বিষয়ে পাশ করতে হবে এবং কমপক্ষে জিপিএ-২.২৫ অর্জন করতে হবে।
- একাধিক বিষয়ে অনুপস্থিত থাকা যাবে না।
- শুধুমাত্র যে কোন ১টি বিষয়ে অনুপস্থিত থাকলে, বাকি অন্যান্য সব বিষয়ে পাশ করতে হবে।
- ১ম বর্ষের সব বিষয়ে পাশ না করা পর্যন্ত ২য় বর্ষের প্রমোশন বন্ধ থাকবে (শুধু অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের জন্য)।
- ২য় বর্ষের সব বিষয়ে পাশ না করা পর্যন্ত ৩য় বর্ষের প্রমোশন বন্ধ থাকবে (শুধু অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের জন্য)।
- ৩য় বর্ষের সব বিষয়ে পাশ না করা পর্যন্ত ৪র্থ বর্ষের প্রমোশন বন্ধ থাকবে (শুধু অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের জন্য)।
- একের অধিক পরীক্ষায় অনুপস্থিত থাকলে ফলাফল নট-প্রমোটেড আসবে আর আপনি পরবর্তী শিক্ষাবর্ষে প্রমোশন পাবেন না।
- নট-প্রমোটেড হলে আপনার ১ বছর শিক্ষাবর্ষ নষ্ট হয়ে যাবে।
- একই শিক্ষাবর্ষে ২ বার নট-প্রমোটেড হলে আপনি অনার্স কোর্সে ড্রপ-আউট বলে বিবেচিত হবেন ।।
- ২ বার নট-প্রমোটেডের কারণে আপনার কোর্স কোর্সটি বাতিল হয়ে যাবে, আর আপনি আর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কোর্স করতে পারবেন না ।
- F প্রাপ্ত কোর্সের গ্রেডকে অবশ্যই কমপক্ষে D গ্রেডে উন্নীত করতে হবে।
- যারা নট-প্রমোটেড হবে, তাদের আবার আগের বর্ষে ভর্তি হয়ে পরিক্ষা দিয়ে পাস করতে হবে।
★ কারা ইমপ্রুভমেন্ট পরীক্ষা দিতে পারবে?
- ১,২ বা ৩ বিষয়ে ফেল করেও যারা পাশ করেছে তাদেরকে পরবর্তী বর্ষে উঠতে ফেল করা বিষয়ে আবার ইমপ্রুভমেন্ট পরীক্ষা দিয়ে পাশ করতে হবে।
- শুধু C, D বা F পেলে ইমপ্রুভমেন্ট দিতে পারবে।
- C,D গ্রেডে যে কোন বর্ষের ক্ষেত্রে ইমপ্রুভমেন্ট একবার দেয়া যায়।
- যতবার ফেইল করবে ততবারই ইমপ্রুভমেন্ট দিতে পারবে, তবে তা রেজিষ্ট্রেশনের মেয়াদের মধ্যে।
- নট-প্রমোটেড প্রাপ্তরা C এবং D প্রাপ্ত বিষয়ে পরীক্ষায় দেয়া বাধ্যতামূলক নয় | তবে মান উন্নয়নের জন্য দিতে পারবে।
★ ইমপ্রুভমেন্ট পরীক্ষার জন্য করণীয় কী?
আপনি যদি রেগুলার পরীক্ষার্থী হয়ে থাকেন তাহলে, যে কলেজে পড়াশোনা করছেন সে কলেজে রেজিস্ট্রেশন এর জন্য আবেদন করতে হবে এবং এইচএসসি বা ডিগ্রি/অনার্স এর রেজিস্ট্রেশন জন্য ফি প্রযোজ্য হবে। এরপর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রদত্ত তারিখ ও কেন্দ্র অনুযায়ী ইমপ্রুভমেন্ট পরীক্ষা দিতে পারবেন।
ইমপ্রুভমেন্ট পরীক্ষা নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-
- C,D ইমপ্রুভমেন্ট পরীক্ষার গ্রেড উন্নতি করতে না পারে তাহলে জিপিএ আগেরটাই থাকবে।
- F/D/C প্রাপ্ত বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে আপনি যা মার্ক পাবেন তাই দেওয়া হবে। পূর্বে F বিষয়ে ইমপ্রুভমেন্ট দিলে B+ এর বেশি দিত না। বর্তমান এই নিয়ম বাতিল করা হয়েছে, যা মার্ক পাবেন তাই দেওয়া হবে।
- ইমপ্রুভমেন্ট পরীক্ষা পুরাতন সিলেবাস অনুযায়ী হবে।
- ইমপ্রুভমেন্ট দিলে আপনার সার্টিফিকেটে কোনো প্রকার ইরেগুলার লেখা থাকবে না। পরীক্ষার এডমিট কার্ডে ইমপ্রুভমেন্ট লেখা থাকবে শুধু।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে এখানে ক্লিক করুন।